প্রতিদিন সাধারণত কাজের শেষেই একে অপরের জন্য কিছুটা সময় বের করা হয়। সংসার নিয়ে আলোচনা থেকে আগামী দিনের পরিকল্পনা, সবই হয় সেই সময়ে। সব কথা ভাল দিকে গড়ায় না। অনেক সময় কথা কাটাকাটিও হয়ে থাকে। সেই রাগ থেকে যায় মনে। তার মধ্যেই ঘুম আসে। অনেক সময়ে রাতের ঘুমে প্রভাব পড়ে কর্মক্ষেত্রের ঝঞ্ঝাটেরও। হয়তো কোনও কড়া কথা শুনতে হল বিছানায় যাওয়ার আগেই। তখনও মনে রাগ নিয়েই ঘুমাতে যেতে হয়। কিন্তু রাগ করে যে ঘুমোতে যেতে নেই, সে কথা বারবার মা-দাদিরা শিখিয়েছেন। এখন চিকিৎসকরাও বলেন। এর কারণ কি জানা আছে?
বিজ্ঞানীরা বলেন, যে অনুভূতি নিয়েই ঘুমাতে যাওয়া হোক না কেন, তা সারারাত ধরে মনের মধ্যে ঘুরপাক খায়। ফলে তা আরও ফুলেফেঁপে ওঠে। অর্থাৎ, রাগ নিয়ে ঘুমাতে গেলে, তা আরও বাড়ে। এর জেরে নিশ্চিন্ত ঘুম হয় না। মাঝেমাঝে ঘুম ভেঙে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। দিনের পর দিন এমন হলে তার প্রভাব গিয়ে পড়ে স্বাস্থ্যের ওপর।
ঘুম সম্পর্কে ব্যাপকভাবে প্রচলিত কিছু ধারণা আমাদের স্বাস্থ্য এবং মেজাজের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। পাশাপাশি আমাদের আয়ু কমিয়ে ফেলছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি দল, রাতে ভাল ঘুমের ব্যাপারে সর্বাধিক প্রচলিত ধারণা বা দাবিগুলো ইন্টারনেট থেকে খুঁজে বের করে।
তারপর তারা সেই দাবিগুলোকে বৈজ্ঞানিক প্রমাণের সাথে মেলান এবং স্লিপ হেলথ জার্নালে সেই গবেষণা প্রকাশিত হয়।
তারা আশা করেন যে ঘুম নিয়ে মানুষের এমন পুরনো ধারণা বা বিশ্বাসগুলো দূর করার ফলে মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতার উন্নতি হবে।
জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল দাবি করেছেন যে প্রতিরাতে চার ঘণ্টারও কম ঘুমিয়ে তিনি একটি সপ্তাহ কাটিয়ে দিতে পারেন।
ব্যবসা বা উদ্যোক্তা পর্যায়ে সাফল্যের পেছনে অফিসের অতিরিক্ত সময়ে বিছানায় ঘণ্টা-খানেক ঘুমিয়ে নেয়ার যে একটা প্রভাব রয়েছে সেটা কমবেশি সবারই জানা।
তবুও গবেষকরা বলেছেন যে পাঁচ ঘণ্টারও কম সময় ঘুমানোকে স্বাস্থ্যকর বলে যে ধারণা প্রচলিত আছে সেটা বরং স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর।
গবেষক ড. রেবেকা রবিন্স বলেন, "দিনের পর দিন পাঁচ ঘণ্টা বা তারও কম সময় ঘুমানো যে স্বাস্থ্যের ভয়াবহ পরিণতির ঝুঁকি অনেকখানি বাড়িয়ে দেয়, তার ব্যাপক প্রমাণ আমাদের কাছে রয়েছে।"
এর মধ্যে রয়েছে হৃদযন্ত্র জনিত বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি, যেমন হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক এবং আয়ুষ্কাল কমে যাওয়া।
তাই, তিনি সুপারিশ করেন যে, সবার প্রতিরাতে একনাগাড়ে সাত থেকে আট ঘণ্টার ঘুমের লক্ষ্য রাখা উচিত।
বিজ্ঞানীদের পরামর্শ, যেকোনও ধরনের মতপার্থক্য থাকলে ঘুমোতে যাওয়ার আগে মিটমাট করে নেওয়া দরকার। তাহলে নির্বিঘ্ন ঘুম হবে। শরীর ও মন সুস্থ থাকবে।
Please visit us:
Web: https://eshonijekori.com/
Contact : +8801304037003
মন ভালো রাখুন নিজে ভালো থাকুন