মানসিকভাবে হালকা বোধ করতে বা মন ভালো রাখতে নিয়মিত ব্যায়ামের চর্চা করে যান। পুষ্টিমানসম্পন্ন ও সুষম খাবার খাবেন। খাবারের তালিকায় বেশি করে ফল আর সবজি রাখুন। মস্তিষ্ককে উদ্দীপিত রাখে এমন খাবার, বিশেষ করে বাদাম কিংবা পালংশাকের মতো খাবার খান।
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন এর তথ্য থেকে জানা যায় যে প্রায় ৭.৫ শতাংশ বাংলাদেশী নাগরিক মানসিক সমস্যার শিকার হচ্ছে। এই দেশে আক্রান্তের পরিমাণ বিশ্বে মোট আক্রান্তের প্রায় ১৫ শতাংশ। আর চিন্তার বিষয় হল,
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন এর মতে সঠিক ব্যবস্থা না নিলে আগামী দিনগুলোতে আরো বেশি মানুষ এই মানসিক অবসাদের শিকার হবে।
মানসিক স্বাস্থ্য কেন আমাদের জন্য এত গুরুত্বপূর্ণঃ
প্রথমত মানুষের স্বাস্থ্য যদি আমাদের ভালো থাকে তাহলে দৈনন্দিন কাজকর্ম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারা যায়।
বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারা যায়।
পরিবার ও সমাজের সঙ্গে সঙ্গতি বিধান করে চলতে পারা যায়।
স্বাভাবিক ও সুস্থ অভিযোজনে মানুষ সক্ষম হয়।
বিভিন্ন বিষয়ে দ্রুত ও সঠিক সিদ্ধান্ত দিতে পারে।
এবং মানুষ আরো বেশী উৎপাদনশীল ও সৃজনশীল হতে পারে।
নিজের ও সমাজের উন্নয়নে আরো বেশি ভূমিকা রাখতে পারে।
মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায়ঃ
নিজের যত্ন নিতে হবে। মানসিক সুস্থতা পেতে নিজের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।
অবদমিত আবেগ প্রকাশের ফলে মানসিক চাপ ও জটিলতা কমে যায়।
বই পড়া এবং গান শোনাও দরকার, নিজের জন্য কিছুটা সময় আলাদা রাখতে হয় নিজের মনের কথা শুনতে হয়।
নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখা উচিত, অতীত ও ভবিষ্যৎ ভুলে বর্তমান দেখার চেষ্টা করতে হয়।
তাছাড়া গতানুগতিক ডিসিপ্লিন জীবনে না থেকে একটু নিজের মত সময় কাটানোর দরকার।
অস্বাস্থ্যকর খাবার আমাদের বিষন্নতার জন্য মারাত্মক ভাবে দায়ী। ভিটামিন বি টুয়েলভ, ওমেগা 3, ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ খাবার আমাদের মস্তিষ্কের আবেগ নিয়ন্ত্রণকারী হরমোন গুলোকে চাঙ্গা রাখতে সাহায্য করে।
এছাড়া তাজা ফলমূল ও শাকসবজি একটা বড় ভূমিকা রাখে। আমাদের মানসিক শাস্তি পুষ্টিকর খাবার নিয়মিত খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ফলে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য আমাদের ঠিক থাকে।
মনকে সুস্থ রাখতেও ঘুমের কোনো বিকল্প নেই। কারণ পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে আমাদের মেজাজ খিটখিটে হয়ে ওঠে। ফলে আমরা ক্লান্তি বোধ করি। কমে যায় আমাদের কর্মস্পৃহা। ঘুম আমাদের শরীরে ক্ষতিগ্রস্ত কোষ গুলো সারিয়ে তোলে। আমাদের মনকে চাঙ্গা করে। তাই মানসিক স্বাস্থ্য সুস্থ রাখতে আমাদের পর্যাপ্ত বিশ্রাম খুব বেশি জরুরি।
এরপরে নিয়মিত ব্যায়াম। মানুষের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে শারীরিক ব্যায়াম খুবই জরুরী। স্ট্রেস ও বিষণ্নতা কাটাতে ভীষণ কাজে লাগে। ব্যায়ামের ফলে শরীরের ক্লান্তি ও মানসিক চাপ হ্রাস পায়। তাই মনকে চাঙ্গা রাখতে এবং মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি।
শখের কাজ করা। নিয়মিত অভ্যাসের একটু বাইরে গিয়ে যেসব বিষয়ে করলে মন ভাল থাকে ওই ধরনের কাজ করা। যেমন অনেকের ছবি আঁকতে ভালো লাগে, বাগান করতে ভালো লাগে,রান্না করতে ভালো লাগে, যখন মন খারাপ থাকবে তখন এই ধরনের কাজগুলো করা উচিত এতে মানসিক প্রশান্তি লাভ করা যায়।
মানসিক স্বাস্থ্যকে ভালো রাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হলো প্রিয়জনদের সাথে সময় কাটানো। প্রিয়জনদের সাথে সময় কাটালে মানসিক হতাশা অনেকাংশে কেটে যায়। পরিবারের সাথে মন খুলে মেলামেশা করলে, মন খুলে কথা বললে, আলিঙ্গন করলে, মানসিক হতাশা অনেকাংশে কমে মানসিক সুস্থতা লাভ করা যায়।
এছাড়াও অন্য একটি উপায় রয়েছে যার মধ্য দিয়ে মানুষের স্বাস্থ্য ভালো রাখা যায়, সেটি হল নিজের মনের যত গোপন কথা অর্থাৎ যে সকল বিষয় নিয়ে হতাশাগ্রস্ত হচ্ছেন, কাছের কোন মানুষের সাথে কথা গুলো শেয়ার করা। এতে করে নিজের মন অনেক হালকা হয়ে যায়। এবং মানসিক সুস্থতা ফিরে পাওয়া যায়।
শারীরিক সুস্থতার চেয়ে মানসিক সুস্থতা আমাদের জন্য আরো বেশি দরকার। কারণ মানসিক সুস্থতা শারীরিক সুস্থতার ওপর অনেক বেশি প্রভাব ফেলে।