কোভিড-পরবর্তী সময়ে সারা বিশ্ব জুড়ে মানসিক স্বাস্থ্যের ছবিটা বদলে গিয়েছে অনেকটাই। মানসিক সুস্থতার উপর কোভিডের প্রভাব নিয়ে পৃথিবীর ২০৪টি দেশে করা একটি সমীক্ষা ল্যানসেট পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। দেখা গিয়েছে, অবসাদ আর উদ্বেগজনিত সমস্যা বেড়েছে যথাক্রমে ২৮% ও ২৬%। ভারতে এই দু’টি ক্ষেত্রেই বৃদ্ধির হার ৩৫% করে। ল্যানসেট আরও জানিয়েছে, ২০২০ সালের পর ১৭-২৪ বছর বয়সি ভারতীয়দের মধ্যে প্রতি সাত জনের এক জনকে গ্রাস করেছে বিষণ্ণতা, উদ্বেগ আর উৎসাহহীনতার মেঘ।
মানসিক অসুস্থতার সঙ্গে শারীরিক অসুস্থতার কিছু পার্থক্য আছে। ব্যক্তিভেদে মানসিক গঠন যেমন পাল্টে যায়, তেমনই মানসিক অসুস্থতার রূপও বদলায়। মধ্যবিত্ত বা উচ্চমধ্যবিত্ত শ্রেণির কোনও ব্যক্তি সিজ়োফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হলে রোগের যে প্রকাশ হবে, তার তুলনায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রত্যন্ত গ্রামের কোনও ব্যক্তির সিজ়োফ্রেনিয়ার প্রকাশ আলাদা, লক্ষণও আলাদা হতে পারে, কারণ তাঁদের জীবনটাই আলাদা! ফলে লক্ষণ শুনে চিকিৎসা করতে চাইলে কারও কারও ক্ষেত্রে হেল্পলাইন কাজ করলেও, সবার ক্ষেত্রে করবে, এমনটা জোর দিয়ে বলা যায় না।
মনোরোগীকে সহায়তা দিতে হলে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য প্রকল্পের অধীনে যে জেলাভিত্তিক মানসিক স্বাস্থ্য প্রকল্প আছে, তার পরিসর বাড়াতে হবে, যাতে তা দূরতম মানুষটির কাছেও পৌঁছে যেতে পারে। পাশাপাশি রোগী-ওষুধ-প্রেসক্রিপশনের যে চিরাচরিত কাঠামো, সেই ছক ভেঙে দেওয়াও দরকার। যে কোনও রোগ সারানোর প্রথম ধাপ হল মানুষের মনে আশা জাগানো। কথা বলা আর শোনা, রোগীর চোখের ভাষা, মুখের রেখার বাঁকবদল পড়তে পারাটা চিকিৎসার একটা বড় অঙ্গ।
পাশাপাশি রয়েছে সচেতনতা বাড়ানোর কাজ।
মানসিক রোগ যে পাপ বা অভিশাপ নয়, চিকিৎসায় ভাল হয়ে যায়, এই সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে হবে। এই ধরনের প্রচার কখনওই অগ্রাধিকার পায়নি। মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসাকে শহরকেন্দ্রিক করে রাখলে চলবে না। পুরো দেশ জুড়ে মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব বাড়াতে হবে এবং চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে এগিয়ে আসতে হবে। করোনা কালীন সময়ে অনলাইনে ও মানসিক সমস্যার জন্য কাউন্সেলিং ও সাইকোথেরাপি নিতে পারেন।
সচেতনতা বৃদ্ধি করুন, এসো নিজে করি তে যোগাযোগ করুন।
Call 01304037003 for an appointment